Harry Potter যখন বাঙালী

 

ছোটো থেকে বড়ো হওয়া যে চরিত্রদের সাথে, তাদের মধ্যে Harry Potter অন্যতম। ছোটবেলাতে যখন গল্প পড়ে কল্পনার দুনিয়াতে পা রাখতাম, সত্যি বলতে তাতেও তো আমাদের নিজস্বতার স্পর্শ থাকতো। তখন যতটা বাইরের পৃথিবী দেখেছি, সেই উপকরণ দিয়েই তো বানাতাম কল্পনার কড়ি-বর্গা, নিজের মতো করে। তাই Harry Potter যদি কলকাতার প্রেক্ষাপটে গড়ে ওঠা গল্প হতো অথবা আমার পাশের বাড়ির ছেলে হতো, তা নিয়ে লেখা একটুও মুস্কিল না। কখনো তো আমরা সেটাই চেয়েছিলাম , Harry-র সাথে বড়ো হতে।

 

আমার চোখে কলকাতার Harry কেমন হবে, কিছু কথোপকথনের মাধ্যমে তুলে ধরলাম।

১. প্রথমত Harryকে তো আমরা চিনি বাবু/ বুবাই / বাবাই নামে। “সেই ছেলেটাই না যে তার মাসির বাড়িতে থাকে; যার মাসতুতো ভাই ছেলেটাকে খুব জ্বালায়।”

 

২.”ওই ছেলেটার তো একটা পোষা প্যাঁচা আছে।”
“বাবা কি আজব শখ। টিয়া, কাকাতুয়া ছেড়ে কি না প্যাঁচা।”
“আচ্ছা, ওটা কি লক্ষী প্যাঁচা ?”

 

৩. Harry: “যাক বাবা! Gryffindor-এই সুযোগ পেয়েছি।এবার মাসিকে জানাতে হবে। যা চিন্তা করছিলো।”

খবর জানানোর পরে, Petunia Dursley-র চিঠি, “হ্যাঁ রে । সে সব তো হলো। ঠিকঠাক খেতে পাচ্ছিস তো ওখানে, বাবা? কম্বলটা রাতে ঢাকা নিবি। তোর তো রাতে ঠান্ডা লাগে।”

কারণ আমাদের মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি।

৪.Ron: “ওই খয়েরী চুলের মেয়েটা বেশ তো। কি নাম যেন?”
Harry: “সবজান্তা গামছাওয়ালা।”

৫. “শুনেছো খবর। ছেলেটা নাকি কিসব জাদু-মন্ত্র করে। ”
“কালো জাদু নাকি?”
“সে সব জানিনা বাবা। কালো না সাদা। রিয়া কাল মাঝরাতে ওদের বাড়ির সামনে একটা উড়ন্ত গাড়ি দেখেছে। অনেক রাত করে পড়াশোনা করে তো।”
“ধ্যুত, তাই আবার হয় নাকি!”

৬.Ron :”এখানকার খাওয়া পোষাচ্ছে না আর, ভাই !”
Harry:”ঠিক বলেছিস! আর্সালানের বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছে করছে!”
Hermione: “ওসব ছাড়! গঙ্গার হাওয়া খেয়ে চুপচাপ পড়তে বোস। সামনে পরীক্ষা।”

৭.Harry:”দেশপ্রিয় পার্কের ঠাকুর একদম miss করা যাবে না!”
Ron :”যাবো কি করে? ভিড় দেখেছিস রাস্তায়?”
Harry:”কেন ভাই? তোর উড়ন্ত গাড়িটা আছে তো।”

৮.Ron(প্রচন্ড রেগে):”কি সব শুনছি? তুই আর Ginny নাকি…”
Harry-র মুখ কাচুমাচু।
Ron :”কবে থেকে এসব চলছে, শুনি?”
Harry:”সেই যে সরস্বতী পুজোয় হলুদ শাড়ি পড়ে…”
Ron: “তুই এমনটা করতে পারলি, ভাই? ও না তোকে ভাইফোঁটা দিয়েছিলো।”

৯. Harry: “Voldemort-এর পোষ্য সাপটাকে শেষ করতে হবে!”
Neville:”কি করে? কোনো মন্ত্র আছে?”
Harry: “‘বাবুরাম সাপুড়ে , কোথা যাস বাপুরে?’-চেষ্টা করে দেখতে পারিস।”
Neville:”ইয়ার্কির একটা সীমা থাকে!”

Dudley আর Harry-র পুজোর জামা নিয়ে তর্ক, Ron -এর পরীক্ষার আগে দই-হলুদের ফোঁটা, Hermione -এর লাল শাড়ি পড়ে Yule Ball-এ আসা -এরম অনেক কিছু হতে পারতো যদি Harry-র সব গল্প কলকাতার বুকে জন্মাতো। তাহলে কি আমরা ছোটবেলার Harryকে পেতাম? তাহলে কি সবাই Harryকে এক-ই ভাবে আপন করে নিতে পারতো?

প্রশ্নের উত্তরটা উহ্যই থাকে না হয়।

This blogpost is an entry to the Blogging contest, a part of the book launch of Harry Potter and the Cursed Child, in association with Kolkata Bloggers.

3 thoughts on “Harry Potter যখন বাঙালী

Leave a comment